মঙ্গল মহতি
মনের মর্জি ধরে
বন এসে চোখে জুড়ে আসন্ন রঙের মুকুল
বদলি হাওয়ায় আসে গ্রহণ এক ধান-দুর্বাকুল;
রঙ লাগলেই রাঙা তুমি নতুন নিহিত চুমি
জেনে যাবে দিন থেকে পরবর্তী দিনের উসুল-
সময়-তো বিদায়ী চুমু’র ঘ্রাণবহা পরিযায়ী পাখ
তাই ঝরা মল্লিকা সেধে চৈত্রটা বলতেই পারে
এসো হে… এসো বৈশাখ।
বাংলার বাথানিয়া
কাজ আছে কারণ আছে
কোথা পাই ছুটন্ত ধুলার এ ভূমি
ধান নাড়ি খড় নাড়ি খলা ভরা বাৎসল্য তুমি।
ঘ্রাণ লাগে প্রাণ লাগে আহা সোনা ধান
লগে আরো কর্মিনী কুলার বাওয়া। তোমার
কাধের ভিটে পাট্টার বেড়ে, কঙ্কণ স্বপ্নের দাওয়া
যতদূর দেখি মাড়াই কলে ধানের ঝর্ণা ঝরা বোরো
কারণ আছে কর্মপেশী যাচে বাংলার জোয়ান বুড়ো
জল নাইরে জল যেন নাহি এ লগন বিরানের বিরান
তবু হাওয়া খাই হাসি মনে পরি তামাটে রোদের পিরান
জল আছে বহুদূরে গাঙের বিথার
আর দেহ জবজব ঘামের পুসিনা বেনামি
ধান নাড়ি তাই খড় নাড়ি খলা ভরা বাৎসল্য তুমি।
বাংলাদেশ
প্রাণনের মাতৃধারা মাটির সহন ও বপনে
তোমার দূরত্ব লৈয়ে সরিষার ফুল মনে আসি
হারাবার রূপ আর এরচেয়ে খুঁজি না আকাশ
তোমার নিকটে এসে হয়ে পড়ে ডাহা অঘ্রান
সহবন্ধু রূপ সাধি খলায় সর্ষে আর ধান
পাতা ঝরি উচ্ছ্বাসে ঘ্রাণে নব অঙ্কুরের জ্যোতি
গরল ভুলিয়া ফিরি পূর্বসূরি মমতার নামে
উদ্ভেদী প্রাণ আসে সহজের চিরায়ুতা ধরে
সবুজের সিঁড়ি ফোটা জালিকুমড়া ডুগার বিথারে
একতারা দোতারার সনে ছনছাওয়া নিগড় সুধাই
নলের বাঁশির পরে আসে যায় ‘দোহাই ভোমরা’
বেদনেও হাসি বায়ু সুরের জাতক সর্বাঙ্গ ঝর্ণার ধারা
এই ফুলদোলা আকাশ আর ধানের মহান উঠোনে
তোমার বিরহমিতি আরো ভালো তোমাকেই আনে
এই সংসার বয়ে আসা স্বতঃ শতো নদীতে অপার…
ছায়াচঞ্চল রোদানুমানে
অতৃপ্ত তিরাস বুকে বৈশাখী দিন
বেদম পুড়ে কী হৃদে পুরে নিয়ে বৃষ্টির
আশ– আরো আরামস্নানজলের প্রসব
কোথায়; এমন মনেমন খোঁজখবর-
ওদিকে মুখানুসারে প্রলম্ব করে- সুরের
ভাওতা বৎসর। দেখি, আনন্দ লাগে না
বলে যা কী-না কর্মচাঞ্চল্যকর, তাহাই
অঙ্গে লাগে দগ্ধতার আশু নিয়ামক।
এমন রোদ! যেন্ বাঘের থাবা
সূর্যের ক্রোধ বোধে কিছু মানুষ-হরিণের
সন্ত্রস্ত ক্ষেপ দেখে হাসি! আসি আমিও
এখানে তাপের মোকাম হতে দ্রুতলয়
ততোধিক ছুটি– কাগুজে সহনের
বর্ণিল বাকোয়াজিগুলো!
অনড় বৃক্ষপত্র- বুঝিবা একদিন দোলহীন-
সারাকাল সম্প্রদিত সকল হাওয়াগানের
খেয়ালি গুরুত্বসংস্থানে। তার নির্বিচার
হন্তারক যারা, সে জমানার তাও কোন
কোন কৃতজ্ঞতা পরখের দায়ে আমূল
প্রকৃতিও বিপন্ন ক্রুদ্ধভাষ্য স্বকীয়তাহীন।
অথবা…
কর্কট ক্রমনমূলে কৃতি কবিতায়
তুমি বলতেই পারো- ছায়ারও ধমনি ছিঁড়ে
যায়- প্রত্যাশার প্রশান্তি রসে, তা’তে
কোনরূপ মিলছে না কালের ক্লটিং ফ্যাক্টর!
আর এদিকে সময়, আমারে যা করলে তুমি
দায়হীন মুখস্ত কিষাণ।